Expected Value example in Bengali
এক্সপেক্টেড ভ্যালু গণনা শিখুন: হাতে-কলমে উদাহরণ
আগের পোস্টে আমরা এক্সপেক্টেড ভ্যালু বা পপুলেশন গড়ের মূল ধারণাটি জেনেছি। আমরা বুঝেছি যে এটি কোনো একটি র্যান্ডম প্রক্রিয়ার দীর্ঘমেয়াদী গড় মানকে বোঝায়। আজ আমরা দুটি ভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিখব কীভাবে এই এক্সপেক্টেড ভ্যালু গণনা করতে হয়।
উদাহরণ ১: একটি সাধারণ ডিসক্রিট ভেরিয়েবলের জন্য
চলুন, আমরা আমাদের প্রিয় খেলা ফুটবল দিয়ে শুরু করি। ধরা যাক, আমরা কলকাতা ফুটবল লিগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতি ম্যাচে গোল করার একটি সম্ভাবনা মডেল তৈরি করেছি।
এখানে আমাদের র্যান্ডম ভেরিয়েবল X হলো একটি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের করা গোলের সংখ্যা। ধরা যাক, এর সম্ভাবনাগুলো নিম্নরূপ:
গোলের সংখ্যা (k) | সম্ভাবনা P(X=k) |
---|---|
০ | 0.15 (15%) |
১ | 0.40 (40%) |
২ | 0.35 (35%) |
৩ | 0.10 (10%) |
এখন আমরা জানতে চাই, এই মডেল অনুযায়ী ইস্টবেঙ্গল প্রতি ম্যাচে গড়ে কতগুলি গোল করবে বলে আশা করা যায়? অর্থাৎ, E[X] কত?
গণনার ধাপ
আমরা আমাদের এক্সপেক্টেড ভ্যালুর মূল সূত্রটি ব্যবহার করব:
প্রতিটি সম্ভাব্য গোলের সংখ্যাকে তার নিজ নিজ সম্ভাবনা দিয়ে গুণ করে যোগ করতে হবে।
- k=0 এর জন্য: \( 0 \times 0.15 = 0 \)
- k=1 এর জন্য: \( 1 \times 0.40 = 0.40 \)
- k=2 এর জন্য: \( 2 \times 0.35 = 0.70 \)
- k=3 এর জন্য: \( 3 \times 0.10 = 0.30 \)
এবার এই সবগুলোকে যোগ করি:
ফলাফল: ইস্টবেঙ্গলের এক্সপেক্টেড গোল সংখ্যা হলো ১.৪। এর মানে হলো, যদি ক্লাবটি এই সম্ভাবনা মডেল অনুযায়ী অনেকগুলো ম্যাচ খেলে, তবে তাদের ম্যাচ প্রতি গড় গোল সংখ্যা ১.৪-এর কাছাকাছি হবে।
উদাহরণ ২: বাইনোমিয়াল ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য
আমরা জানি, বাইনোমিয়াল ডিস্ট্রিবিউশনের এক্সপেক্টেড ভ্যালু বের করার একটি সহজ সূত্র আছে: \( E[X] = n \times p \)। আজ আমরা একটি উদাহরণের মাধ্যমে প্রমাণ করব যে এই সহজ সূত্রটি এবং আমাদের মূল সূত্র ( \( \sum k \cdot P(X=k) \) ) একই ফল দেয়।
পরিস্থিতি: ধরা যাক, কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা ক্রেতার অনুরোধে তার ঝালমুড়িতে অতিরিক্ত লেবুর রস দেন। আমরা জানি যে তিনি ৭০% ক্ষেত্রে (p=0.7) অনুরোধ রাখেন। আমরা ৪ জন ক্রেতাকে (n=4) পর্যবেক্ষণ করব।
আমাদের র্যান্ডম ভেরিয়েবল X হলো কতজন ক্রেতা অতিরিক্ত লেবুর রস পেলেন। এখানে \(X \sim \text{Bin}(4, 0.7)\)।
সহজ সূত্র অনুযায়ী গণনা
সহজ সূত্র অনুযায়ী, আমরা আশা করতে পারি যে ৪ জনের মধ্যে গড়ে ২.৮ জন ক্রেতা অতিরিক্ত লেবু পাবেন।
মূল সূত্র দিয়ে প্রমাণ
এবার আমরা মূল সূত্র দিয়ে এটি প্রমাণ করব। প্রথমে আমাদের বাইনোমিয়াল PMF ফর্মুলা ব্যবহার করে প্রতিটি সম্ভাব্য ফলাফলের (k=0, 1, 2, 3, 4) সম্ভাবনা বের করতে হবে।
গণনার পর সম্ভাবনাগুলো হলো:
- P(X=0) = 0.0081
- P(X=1) = 0.0756
- P(X=2) = 0.2646
- P(X=3) = 0.4116
- P(X=4) = 0.2401
এবার মূল সূত্র প্রয়োগ করি:
দেখুন, দুটি পদ্ধতির ফলাফলই ২.৮! এটি প্রমাণ করে যে বাইনোমিয়াল ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য \( E[X] = n \times p \) সূত্রটি সম্পূর্ণ সঠিক।
স্যাম্পেল প্রোপোরশনের (p̂) এক্সপেক্টেড ভ্যালু
মাঝে মাঝে আমরা মোট সফলতার সংখ্যার চেয়ে সফলতার হারে (proportion) বেশি আগ্রহী থাকি। একে বলা হয় p̂ (পি-হ্যাট), যেখানে \( \hat{p} = X/n \)। এর এক্সপেক্টেড ভ্যালুর সূত্রটিও খুব সহজ:
আমাদের ঝালমুড়ির উদাহরণে, আমরা আশা করতে পারি যে ক্রেতাদের সফলতার হার হবে 0.7 বা 70%, যা আমাদের প্রাথমিক সম্ভাবনা p-এর সমান।
উপসংহার
এই ব্যবহারিক উদাহরণগুলোর মাধ্যমে আমরা দেখলাম কীভাবে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এক্সপেক্টেড ভ্যালু গণনা করা যায়। এটি একটি তাত্ত্বিক গড় হলেও, ব্যবসা, অর্থনীতি এবং বিজ্ঞানের জগতে ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এটি একটি অপরিহার্য টুল।